হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায় ও হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর ১০টি প্রভাব ইসলাম

সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু্ন, আপনাকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। আপনি কি হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায় ও হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর ১০টি প্রভাব ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? এবং হস্ত মৈথুনে বদ অভ্যস্ত ও এই পাপ থেকে বাচতে চান? তাহলে আজকেই এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র আপনার জন্য উপকারী হতে চলেছে।
এই প্রতিবেদনটি প্রথম থকে শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায় ও হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর ১০টি প্রভাব ইসলাম সম্পর্কে। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য অনুরোধে রইলো।

উপস্থাপনা

হস্ত মৈথুন বা স্বমৈথুন একটি সাধারণ এবং স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়া, যা অনেক মানুষ তাদের যৌন জীবনের অংশ হিসেবে করেন। 

এটি দেহের যৌন চাহিদা পূরণের একটি পদ্ধতি এবং অনেকের জন্য এটি মানসিক চাপ হ্রাসের উপায়ও হতে পারে।

হস্ত মৈথুন সাধারণত যৌবনের প্রারম্ভে শুরু হয়, যা সাধারণত ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে।
 
এই সময় শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা হস্ত মৈথুনের দিকে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করে।

হস্ত মৈথুন একটি স্বাভাবিক আচরণ এবং বেশিরভাগ মানুষ জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে এটি করে। তবে, প্রতিটি ব্যক্তির জন্য এটি ভিন্ন হতে পারে, এবং কিছু মানুষ এতে দীর্ঘ দিন ধরে অভ্যস্ত হতে পারেন। 

তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।

হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায়

জীবনের কোন না কোন সময় মানুষ হস্তমৈথুন করেন। এবং কোন এক সময় এটা মারাত্মক অভ্যাসে পরিণত হয়। কোন ব্যক্তি চাইলেও হুট করে এই অভ্যাসটি ছাড়তে পারে না। 

ক্ষণিকের সুখের জন্য অনেকেই এই কাজটিকে খুব উপভোগ করে। কিন্তু হস্তমৈথুন যে কত ক্ষতির কারণ এটা অনেকেই জানেন না।

আর তাই না জেনে এই কাজটিকে খুব উপভোগ করেন। যখন এর ক্ষতিকর প্রভাব শরীর ও মনের ওপর পড়ে তখন হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত ব্যক্তি তার ক্ষতি নিজে নিজেই বুঝতে পারে।

তখন তো হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায় খোঁজেন। হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায়গুলো হলোঃ

১. মানসিক নিয়ন্ত্রণ এবং সচেতনতা:
  • মানসিক প্রস্তুতি: প্রথমেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন যে আপনি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে চান। নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে এটি কমাতে হবে বা বন্ধ করতে হবে।
  • অন্য কাজে মনোযোগ দিন: যখনই এই প্রবণতা আসে, তখন নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। নতুন কিছু শিখতে পারেন, যেমন কোনো সৃজনশীল কাজ করা, বই পড়া, অথবা ব্যায়াম করা।
২. শারীরিক ব্যস্ততা:
  • ব্যায়াম করুন: শারীরিক কাজ, বিশেষ করে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়, যা এই প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে।
  • বাইরে সময় কাটান: প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো, হাঁটা বা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করা মনকে শান্ত করতে সহায়তা করে।
৩. পর্নোগ্রাফি থেকে দূরে থাকা:
  • অপ্রয়োজনীয় উপাদান এড়িয়ে চলুন: পর্নোগ্রাফি বা উসকানিমূলক কনটেন্ট থেকে দূরে থাকুন। এগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখলে হস্ত মৈথুনের প্রতি আকর্ষণ কমে আসবে।
  • ডিজিটাল ডিটক্স: অযথা ইন্টারনেট ব্রাউজিং বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কম সময় ব্যয় করুন, যেখানে এমন কন্টেন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৪. সামাজিক সংযোগ বৃদ্ধি:
  • বন্ধু ও পরিবারের সাথে সময় কাটান: সামাজিকীকরণের মাধ্যমে মানসিকভাবে ভালো থাকা সম্ভব। নিজেকে একা রাখবেন না, বরং আপনার কাছের মানুষের সাথে সময় কাটান।
  • সমর্থন গ্রুপে যোগ দিন: কিছু মানুষ নিজেদের প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তার জন্য বিশেষ সমর্থন গ্রুপে যোগ দিয়ে থাকে।
৫. সাহায্য নিন:
  • থেরাপিস্ট বা কাউন্সেলরের সাথে কথা বলুন: যদি নিজের ইচ্ছাশক্তি দিয়েও প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তবে পেশাদার থেরাপি নেওয়া একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। কাউন্সেলররা মানসিকভাবে সাহায্য করতে পারে।
  • হস্ত মৈথুন থেকে বাঁচার জন্য প্রতিরোধের পাশাপাশি ধৈর্য এবং মনোবল খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধীরে ধীরে অভ্যাসটি কমিয়ে আনতে হবে এবং নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।

হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর ১০টি প্রভাব ইসলাম

ইসলামে হস্ত মৈথুনকে (মাস্তুরবেশন) অপছন্দনীয় ও ক্ষতিকর কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। হস্তমৈথুনের ফলে বিভিন্ন শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক ক্ষতি সাধিত হয়। 

যা একজন ব্যক্তির ইমান, চরিত্র, এবং জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। এখানে ইসলামের আলোকে হস্তমৈথুনের ১০টি ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরা হলো:

১. আত্মিক দূরত্ব: হস্তমৈথুনে লিপ্ত হওয়া একজন ব্যক্তির আল্লাহর সাথে সম্পর্ক দুর্বল করে দেয়। আল্লাহর কাছে আত্মিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে পাপমুক্ত থাকা জরুরি। এই কাজ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও তাওবা করতে বাধ্য করে।

২. নামাজে একাগ্রতার অভাব: অশ্লীল চিন্তা ও হস্তমৈথুনে আসক্ত হলে নামাজে মনোযোগ ও একাগ্রতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, যা ব্যক্তির ইবাদতে বাধাগ্রস্থ করে বা ইবাদতের মান কমিয়ে দেয়।

৩. ইমানের দুর্বলতা: হস্তমৈথুনের কারণে একজনের ইমান দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তাকে সহজেই শয়তানের কুমন্ত্রণায় ফেলে দেয়। পাপের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায় এবং হস্ত মৈথুনে আসক্ত ব্যক্তি নেক কাজ থেকে দূরে সরে যায়।

৪. বিবাহের প্রতি উদাসীনতা: ইসলামে হস্তমৈথুনের পরিবর্তে বিবাহের মাধ্যমে বৈধ সম্পর্ক স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হস্তমৈথুনে আসক্ত হলে, বিবাহের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে এবং বৈধ সম্পর্কের প্রয়োজন অনুভব নাও হতে পারে।

৫. মানসিক অস্থিরতা: এটি মানসিক অবসাদ, অপরাধবোধ, এবং আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির কারণ হতে পারে। ফলে একজন ব্যক্তি মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে থাকে।

৬. অশ্লীলতা ও পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্তি: হস্তমৈথুন সাধারণত পর্নোগ্রাফি ও অশ্লীল কনটেন্টের সাথে যুক্ত থাকে, যা আরও বেশি পাপের দিকে নিয়ে যায় এবং হৃদয়কে কলুষিত করে তোলে।

৭. শারীরিক ক্ষতি: হস্তমৈথুন অতিরিক্ত করলে শারীরিক দুর্বলতা, ক্লান্তি, যৌনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, যা দাম্পত্য জীবনে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৮. আল্লাহর অসন্তুষ্টি: ইসলামে যেকোনো ধরনের অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর অসন্তুষ্টির দিকে পরিচালিত করার জন্য হস্তমৈথুনের অভ্যাস একটি বড় কারণ। এটা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

৯. অপরাধবোধ এবং লজ্জা: হস্তমৈথুনের কারণে একজন মানুষ বারবার পাপের মধ্যে পড়ে গিয়ে নিজের প্রতি অপরাধবোধ এবং লজ্জা অনুভব করে। যা মানসিক শান্তি নষ্ট করে।

১০. পরকালীন শাস্তি: যদি কেউ তাওবা না করে হস্তমৈথুনে লিপ্ত থাকে, তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে এর ফলে তাকে পরকালে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ইসলামে শরীর ও আত্মার পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি, যা হস্তমৈথুনে লিপ্ত থাকলে নষ্ট হয়।

এই সব ক্ষতিকর প্রভাবগুলো এড়িয়ে চলার জন্য ইসলামে বিবাহকে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং পাপ থেকে বিরত থাকতে বিভিন্ন দোয়া, ইবাদত, এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

হস্ত মৈথুন থেকে বাচার উপায় দোয়া

ইসলামিক পরিপ্রেক্ষিতে হস্তমৈথুন থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা এবং তাঁর থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এখানে কিছু দোয়া ও আমল দেয়া হলো যা হস্ত মৈথুনের প্রবণতা থেকে বাঁচার জন্য সহায়ক।

১. সুরা আল-ফালাক এবং সুরা আন-নাস পড়া: এগুলো শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুরা। এই সুরাগুলো পড়া মানসিক প্রশান্তি এনে দেয় এবং খারাপ প্রবৃত্তি থেকে রক্ষা করতে পারে।

২. আস্তাগফিরুল্লাহ (استغفر الله) বেশি বেশি বলা: আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাঁর থেকে সাহায্য চাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত "আস্তাগফিরুল্লাহ" পড়লে পাপের জন্য ক্ষমা পাওয়া এবং অন্তর পরিশুদ্ধ হওয়া সম্ভব।

(অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি আমার প্রতিপালক, সকল পাপ থেকে এবং আমি তাঁর কাছে তাওবা করি)।

শুদ্ধ করুন, আমার থেকে খারাপ ও অশ্লীলতা দূর করুন এবং আমাকে মুত্তাকীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন)।
৩. রোজা রাখা: নবী মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, যারা বিবাহ করতে অক্ষম, তারা রোজা রাখুক। কারণ রোজা কামনার প্রবণতা কমায় এবং অন্তরকে পরিশুদ্ধ রাখে।

রোজা রাখলে হস্ত মৈথুনের ইচ্ছাশক্তি থাকে না। কেননা রোজা শরীর ও মনকে সংযমে রাখে।

৪. বেশি বেশি সালাত ও কুরআন তিলাওয়াত করা: সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও গভীর হয়, যা খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে। কুরআন তিলাওয়াত অন্তরকে প্রশান্ত করে এবং আল্লাহর দিকে মনোযোগ দেয়।

এই দোয়া ও আমল নিয়মিত করলে, ধৈর্য ও ইমানের সাথে হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

হস্ত মৈথুনের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

হস্তমৈথুনের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক উপায়ে কিছু চিকিৎসা এবং জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এতে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে এবং ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি পায়। 

এখানে হস্তমৈথুনের প্রাকৃতিক চিকিৎসার কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো:

১. নিয়মিত ব্যায়াম করা: শারীরিক কার্যকলাপ যেমন দৌড়, সাঁতার, জিম করা বা যে কোনো ধরণের ব্যায়াম মানসিক ও শারীরিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

ব্যায়াম শরীরে ডোপামিন এবং সেরোটোনিনের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে, যা ইচ্ছাশক্তি বাড়ায় এবং নেতিবাচক চিন্তা কমায়।

২. সুষম খাদ্য গ্রহণ:
  • জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার: জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, ডিম, মাংস, কুমড়ার বীজ ইত্যাদি খেলে যৌন ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন ও মিনারেল: ভিটামিন বি, সি, এবং ই যুক্ত খাবার গ্রহণ শরীরকে সুস্থ রাখে এবং মনকে স্থির করতে সাহায্য করে।
  • ফলমূল ও শাকসবজি: পুষ্টিকর খাবার, বিশেষ করে ফল ও সবজি খেলে শরীরের কার্যক্ষমতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
৩. মেডিটেশন ও মনোযোগ চর্চা: মেডিটেশন বা ধ্যান মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এবং চিন্তাগুলোকে ইতিবাচক দিকে নিয়ে যায়। নিয়মিত ধ্যান করলে মানসিক শক্তি বাড়ে এবং শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি আসে।

৪. ঘুমের নিয়মাবলী ঠিক রাখা: প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমানো জরুরি, কারণ ঘুমের অভাবে শরীরে দুর্বলতা আসে এবং মানসিক উত্তেজনা বাড়ে। নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

৫. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমানো: মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা একাকীত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পরিবার বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, হালকা বিনোদনমূলক কার্যক্রম করা, বা প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো উপকারী হতে পারে।

৬. পর্নোগ্রাফি এড়িয়ে চলা: পর্নোগ্রাফি দেখা এবং অশ্লীল কনটেন্ট থেকে দূরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। অশ্লীল কন্টেন্টের প্রতি আসক্তি থেকে মুক্তি পেলে হস্তমৈথুনের প্রবণতা কমে আসে। 

পর্ন ফিল্টার বা মনিটরিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে এই ধরণের কন্টেন্ট এড়ানো সম্ভব।

৭. সামাজিক ও আধ্যাত্মিক সংযোগ বৃদ্ধি: বন্ধু-বান্ধব, পরিবার, এবং ধর্মীয় কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করলে মনোযোগ অন্যদিকে সরে যায়। আধ্যাত্মিক চর্চা যেমন নামাজ, প্রার্থনা, বা কুরআন তিলাওয়াত মনকে শুদ্ধ করে।

৮. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান: শরীরে পর্যাপ্ত পানি পান করলে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং ইচ্ছাশক্তি উন্নত করে।

১০. পরামর্শ ও থেরাপি: প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ বা থেরাপি নেও্যা যাওয়া যেতে পারে। মানসিক ও আচরণগত থেরাপি নিয়ে এই খারাপ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।

এগুলো নিয়মিত মেনে চললে ধীরে ধীরে হস্তমৈথুনের প্রতি আসক্তি কমে আসবে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সহজ হবে।

হস্ত মৈথুনের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা

হস্তমৈথুনের অতিরিক্ত আসক্তি কখনও কখনও শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ধরনের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা একটি বিকল্প হতে পারে। 

চিকিৎসাটি সাধারণত মানসিক স্বাস্থ্য ও আচরণগত থেরাপির ওপর নির্ভর করে, যেখানে চিকিৎসক বা থেরাপিস্টের সহায়তা প্রয়োজন হয়। এখানে কিছু এলোপ্যাথিক চিকিৎসার পদ্ধতি দেওয়া হলো:

কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT): কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি হলো মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসার একটি বিশেষ পদ্ধতি যা মানুষের নেতিবাচক চিন্তা ও অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। 

CBT মানসিক পরিবর্তন এনে আসক্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

এই থেরাপিতে রোগীকে শেখানো হয় কীভাবে নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বা চিন্তার প্রতি প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং কীভাবে সমস্যা মোকাবিলা করা যায়।

হরমোন থেরাপি: কিছু ক্ষেত্রে, যৌন ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণের জন্য হরমোন থেরাপি ব্যবহার করা হয়। এই চিকিৎসাটি শরীরে হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করে যৌন ইচ্ছাকে কমাতে সাহায্য করে।

আচরণগত থেরাপি: আচরণগত থেরাপিতে একজন রোগীকে শেখানো হয় কীভাবে তাদের ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করা যায়।

এই থেরাপিতে ধীরে ধীরে নতুন ও ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে হস্তমৈথুনের আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

ওষুধ নির্ধারণকারী চিকিৎসক বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা: যারা দীর্ঘদিন ধরে হস্তমৈথুনে আসক্ত, তারা একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন। 

তারা ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি বা ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন।

মানসিক চাপ কমানোর ওষুধ: অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মানসিক চাপ হস্তমৈথুনের আসক্তির কারণ হতে পারে। এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় মানসিক চাপ কমানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ প্রদান করা হয়, যা আসক্তি কমাতে সাহায্য করে।

জীবনধারা পরিবর্তন: চিকিৎসার পাশাপাশি জীবনধারা পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা মানসিক ও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং হস্তমৈথুনের আসক্তি কমাতে সহায়ক হয়।

উপসংহার। হস্তমৈথুন থেকে বাঁচার উপায় ও হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর ১০টি প্রভাব ইসলাম

পাঠক, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে। এবং এই আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন হস্ত মৈথুন থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা।

আরও জানতে পেরেছেন হস্ত মৈথুন থেকে বাচার উপায় দোয়া, হস্ত মৈথুনের ক্ষতিকর ১০টি প্রভাব ইসলাম সম্পর্কে।

আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি আপনার প্রিয়জনদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। 

এতক্ষণ ধরে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আরো নতুন নতুন তথ্যবহুল আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট www.sumonworld.com এ প্রতিদিন পরিদর্শন করুন। ভালো থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url