সান্ডার তেল এর কাজ কি? সান্ডার তেল এর ব্যবহারের নিয়ম

বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো সান্ডা। অনেকেই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সান্ডা প্রানীটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অনুসন্ধান করছে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি। এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন সান্ডার তেল এর কাজ কি? সান্ডার তেল এর ব্যবহারের নিয়ম সে সম্পর্কে।

আরও জানতে পারবেন সান্ডার তেল এর ব্যবহারের নিয়ম, সান্ডার তেল কোথায় পাওয়া যায় এবং সান্ডা কি হালাল সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তাহলে, চলুন সান্ডার তেল এর কাজ কি? এর মূল আলোচনায় যাওয়া যাক। 

সান্ডার তেল (Sanda Oil) একটি হারবাল তেল, যা সাধারণত পুরুষদের যৌনস্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত বাহ্যিকভাবে লিঙ্গে মালিশ করে ব্যবহারের জন্য তৈরি। নিচে এর কাজগুলো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:

সান্ডার তেলের মূল কাজসমূহ:

১। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি: লিঙ্গে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, যার ফলে লিঙ্গ শক্ত ও দৃঢ় হয়।

২। লিঙ্গের স্নায়ু উদ্দীপনা: লিঙ্গের স্নায়ুগুলোর সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধিতে কার্যকর।

৩। সহবাসের সময়কাল বাড়ানো: নিয়মিত ব্যবহারে অনেকেই দাবি করেন, দ্রুত বীর্যপাত প্রতিরোধে এটি সহায়তা করে।

৪। লিঙ্গের আকার ও দৃঢ়তা: কিছু ব্যবহারকারী মনে করেন এটি লিঙ্গের দৈর্ঘ্য বা মোটা হওয়াতে সামান্য ভূমিকা রাখতে পারে, তবে এ দাবির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কম।

৫। ব্যথা ও অবসাদ দূরীকরণ: তেলের মালিশে স্থানীয় পেশীর অবসাদ দূর হয় এবং মানসিক প্রশান্তি আসতে পারে।

উপাদানসমূহ (সাধারণত):

সতর্কতা: এটি শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য। অতিরিক্ত মালিশ করলে ত্বকে জ্বালা বা অস্বস্তি হতে পারে। যদি ত্বকে অ্যালার্জি বা র‍্যাশ হয়, তাহলে ব্যবহার বন্ধ করুন।চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা সর্বোত্তম।

সান্ডার তেল ব্যবহারের নিয়ম নিচে ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:

১. ব্যবহারের উপযুক্ত সময়: সাধারণত রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। মালিশের পরে অন্তত ১-২ ঘণ্টা পানি বা সাবানের সংস্পর্শে না আনা ভালো।

২. ব্যবহারের স্থান: শুধুমাত্র লিঙ্গের গোড়ার অংশ থেকে আগা পর্যন্ত। মুন্ড বা শীষে (glans) তেল ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এটি খুব সংবেদনশীল এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে।

৩. মালিশের পদ্ধতি: দুই আঙুলে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে নিন। লিঙ্গের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ধীরে ধীরে তেল মালিশ করুন। চাপ প্রয়োগ না করে হালকা হাতে ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত মালিশ করুন। মালিশ শেষ হলে, শুকিয়ে যেতে দিন। চাইলে পরে ধুয়ে ফেলতে পারেন।

৪. কতদিন ব্যবহার করবেন: সাধারণত ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহার করলে প্রভাব দেখা যেতে পারে। তবে এটি নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ও তেলের মানের ওপর।

৫. কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা ব্যবহারের আগে ত্বকে অ্যালার্জি আছে কি না, তা যাচাই করুন (অল্প করে হাতে লাগিয়ে দেখুন)। চোখ, মুখ বা যৌনাঙ্গের অভ্যন্তরে যেন না পৌঁছায়, তা খেয়াল রাখুন। যদি জ্বালা, চুলকানি বা র‍্যাশ দেখা দেয়, তাহলে ব্যবহার বন্ধ করুন।

সান্ডার তেল সাধারণত নিচের জায়গাগুলোতে সহজেই পাওয়া যায়:

১. হোমিওপ্যাথি ও হারবাল মেডিসিনের দোকান: বেশিরভাগ বড় শহরে হারবাল/আয়ুর্বেদিক দোকানে এটি সহজলভ্য। বিশেষ করে যেসব দোকানে যৌনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত পণ্য বিক্রি হয়, সেখানে পাওয়া যায়।

২. অনলাইন মার্কেটপ্লেস: বাংলাদেশ ও ভারতে অনেক অনলাইন সাইটে সান্ডার তেল পাওয়া যায়, যেমন:

৩. আয়ুর্বেদিক চিকিৎসালয় বা ইউনানী দোকান: যেসব স্থানে আয়ুর্বেদিক বা ইউনানী চিকিৎসা দেওয়া হয়, সেখানেও এই তেল বিক্রি করা হয়।

৪. ফার্মেসি (বেছে বেছে): সব ফার্মেসিতে না থাকলেও, কিছু বিকল্প হারবাল যৌন স্বাস্থ্য পণ্য বিক্রয়কারী ফার্মেসিতে পাওয়া যায়।

কেনার আগে সতর্কতা:

নিচে কিছু নির্ভরযোগ্য উৎস উল্লেখ করা হলো, যেখানে আপনি এই তেল কিনতে পারেন:

অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম:

১। Daraz Bangladesh

Daraz-এ সান্ডার তেল পাওয়া যায়। এখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও প্যাকেজিং উপলব্ধ। মূল্য ও রিভিউ দেখে পছন্দসই পণ্যটি বেছে নিতে পারেন।

২। Ubuy Bangladesh

Ubuy-এ ১০০% অরিজিনাল Sandha Saandhha Sanda Oil পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে এটি স্টকে নেই। স্টক আপডেটের জন্য সাইটটি নিয়মিত চেক করতে পারেন।

৩। Shopnobari.com

এই সাইটে REPL Saandhha Oil (15ml) পাওয়া যায়। এটি একটি আয়ুর্বেদিক তেল, যা পুরুষদের যৌনস্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক।

৪। AllMarket.com.bd

AllMarket-এ সান্ডার তেল উপলব্ধ, যা পুরুষদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এখানে পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ ও ব্যবহারবিধি পাওয়া যায়।

৫। PaikariBazarBD.com

এই সাইটে সান্ডার তেল পাওয়া যায়, যা প্রদাহ কমানো ও সর্দি-কাশি দূর করতে সহায়ক।

সতর্কতা: নকল পণ্য থেকে সাবধান থাকুন। ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করুন।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: আপনি যদি রাজশাহীতে থাকেন এবং স্থানীয়ভাবে সান্ডার তেল কিনতে চান, তাহলে আমি আপনার নিকটস্থ দোকানগুলোর তথ্য খুঁজে দিতে পারি। আমাকে জানান, আমি সাহায্য করতে প্রস্তুত।

"সান্ডা" হালাল কি না—এটি নির্ভর করে আপনি "সান্ডা" বলতে কী বোঝাচ্ছেন তার ওপর। নিচে দুইটি ভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করা হলো:

১. যদি "সান্ডা" বলতে গুইসাপের মতো দেখতে এক ধরনের  বোঝান (Monitor Lizard): ইসলামিক শরিয়াতে গুইসাপ বা সান্ডা খাওয়া নিয়ে মতভেদ আছে।

হাদীস অনুযায়ী, রাসূল (সা.) নিজে এটি খাননি, কিন্তু হারামও বলেননি।

হাদীস থেকে প্রমাণ: ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে সান্ডা (দাব্ব) খেতে লাগলেন, তখন রাসূল (সা.) বলেন, “এটা এমন একটি জিনিস, যা আমার কওম খায় না, তাই আমি খাচ্ছি না।” — (সহীহ মুসলিম)

হানাফি ও মালিকি মাযহাবে এটি মাকরূহ (অপ্রিয়) বা নিরুৎসাহিত। শাফেয়ি ও হানবলি মাযহাবে এটি হালাল বলে বিবেচিত, কারণ রাসূল (সা.) নিষেধ করেননি।

২. যদি "সান্ডা তেল" বোঝান (হারবাল তেল): সান্ডা তেল যদি শুধু হারবাল উপাদানে তৈরি হয় (যেমন: তিল তেল, অশ্বগন্ধা, মৌসলি ইত্যাদি), তাহলে তা হালাল।

সান্ডা (প্রাণী) – English: Monitor Lizard। বাংলা ভাষায় "সান্ডা" বলতে সাধারণত বোঝানো হয় একটি বড় গুইসাপজাতীয় সরীসৃপ প্রাণী। এর বৈজ্ঞানিক নাম Varanus bengalensis (Bengal Monitor Lizard)।

"সান্ডা" শব্দের আঞ্চলিক ব্যবহার (যদি থাকে), কিছু অঞ্চলে "সান্ডা" শব্দটি লোকমুখে ভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়।

আরবদের "সান্ডার গোশত" খাওয়ার উপকারিতা বিষয়টি মূলত লোকজ বিশ্বাস ও মরুভূমির জীবনধারার অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে গঠিত। এখানে "সান্ডা" বলতে বোঝানো হয় দাব্ব বা মনিটর লিজার্ড (Monitor Lizard)—যা আরব দেশগুলোর মরু অঞ্চলে পাওয়া যায় এবং কিছু  জাতিগোষ্ঠী মানুষ এটি খেয়ে থাকেন।

হাদিস ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ

হাদিস: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে দাব্ব (সান্ডা) পরিবেশন করা হয়, তিনি খাননি, কিন্তু বলেননি যে এটা হারাম।

খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) তখন বলেন, "আমি এটা খাচ্ছি, এটা হারাম নয়।"

হালাল হিসেবে গণ্য করা হয় (বিশেষ করে শাফেয়ি ও হানবলি মাযহাবে)। হানাফি মতে এটি মাকরূহ, তবে হারাম নয়।

আরবদের লোকবিশ্বাসভিত্তিক উপকারিতা: লোকবিশ্বাসে উপকারিতা ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো :

বৈজ্ঞানিক প্রমাণ: এখন পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে এই উপকারিতাগুলোর কোনো স্পষ্ট প্রমাণ নেই। এটি শুধু একটি প্রাণীজ প্রোটিন, এবং প্রোটিন অনেক উৎস থেকেই পাওয়া যায়। সঠিকভাবে রান্না না করলে ব্যাকটেরিয়া বা প্যারাসাইট থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে।

আইনগত ও পরিবেশগত বিবেচনা: অনেক দেশে (যেমন বাংলাদেশ) সান্ডা সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী, তাই খাওয়া ও শিকার আইনত নিষিদ্ধ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং পরিবেশ রক্ষায় এই প্রজাতিকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের এই পোস্টটির একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। আশা করি এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং পড়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন সান্ডার তেল এর কাজ কি? সান্ডার তেল এর ব্যবহারের নিয়ম।

ব্যক্তিগত ভাবে বলতে গেলে সান্ডা নামক সরিসৃপ প্রাণীটির গোস্ত খাওয়া কিনবা যৌনাঙ্গে  এর তেলের ব্যবহার আমার কাছে খুব হাস্যকর মনে হয়েছে। সান্ডার গোস্ত খাওয়া তো দূরের কথা এই প্রাণীটি দেখতেই তো কেমন জানি লাগে। 

আপনাদের রুচির উপর নির্ভর করে এটা যে, আপনি সান্ডার গোস্ত খাবেন কি না এবং এর তেল ব্যবহার করবেন কি না। আমার মতামত আমি ব্যক্ত করেছি। আপনিও আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।