দারিদ্রতা থেকে মুক্তির দোয়া আরবি-দারিদ্র্য বিমোচনে এনজিওর ভূমিকা
দারিদ্রতা থেকে মুক্তির দোয়া আরবি-দারিদ্র্য বিমোচনে এনজিওর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি আজকের এই আর্টিকেলটিতে। বিস্তারিত আলোচনা জানতে এই আর্টিকেলটির সাথেই থাকুন।
দারিদ্রতা একটি অভিশাপ। আর এই অভিশাপ থেকে আমাদেরকে মুক্তি পেতে হলে এই দারিদ্রতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে হবে এবং দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে ও মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।
দারিদ্র্য বিমোচন কাকে বলে
দারিদ্র্য বিমোচন বলতে সমাজ থেকে দারিদ্র্য বা গরিবি দূর করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। অর্থাৎ, মানুষকে এমনভাবে সহায়তা করা যাতে তারা ন্যূনতম চাহিদা — যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা — পূরণ করতে সক্ষম হয় এবং স্বাবলম্বীভাবে জীবনযাপন করতে পারে।
সহজভাবে বলা যায় “দারিদ্র্য বিমোচন হলো সেই সকল পদক্ষেপ ও কার্যক্রম, যার মাধ্যমে মানুষের দারিদ্র্য দূর করে তাদের জীবনমান উন্নত করা হয়।”
যেমন — সরকার যদি দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ভাতা ও প্রশিক্ষণ দেয়, তাহলে সেটাই দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্যোগ।
দারিদ্রতা থেকে মুক্তির দোয়া আরবি
দারিদ্রতা (গরিবি) থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি অত্যন্ত উপকারী ও সহিহ দোয়া আছে, যা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। নিচে আরবি, উচ্চারণ ও অর্থসহ দেওয়া হলো
দারিদ্রতা থেকে মুক্তির দোয়া (আরবি): اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি, ওয়া আউযু বিকা মিন আযাবিল কবর।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই কুফরি (অবিশ্বাস) ও দারিদ্রতা থেকে, এবং তোমার কাছে আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে।
এই দোয়াটি রাসূলুল্লাহ ﷺ প্রায়ই পাঠ করতেন (সহিহ হাদীস: আবু দাউদ, নাসাঈ)। নিয়মিত নামাজের পর এই দোয়াটি পড়লে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা দারিদ্রতা ও অভাব থেকে মুক্তি দেবেন।
দারিদ্র্য বিমোচনে এনজিওর ভূমিকা
বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে এনজিও (Non-Governmental Organization) বা বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সরকারের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে দরিদ্র মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করছে। নিচে দারিদ্র্য বিমোচনে এনজিওর ভূমিকা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো
১. ক্ষুদ্রঋণ প্রদান: এনজিওগুলো দরিদ্র মানুষকে স্বল্প সুদে বা জামানতবিহীন ঋণ দেয়। এর মাধ্যমে দরিদ্র জনগণ ছোট ব্যবসা, কৃষিকাজ বা হস্তশিল্প শুরু করে স্বাবলম্বী হতে পারে।
যেমন: গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক (BRAC), আশা (ASA), প্রশিকা (PROSHIKA) ইত্যাদি সংস্থা।
২. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি: এনজিওগুলো গ্রামীণ ও দরিদ্র পরিবারের শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা চালু করেছে। পাশাপাশি যুব সমাজ ও নারীদের কারিগরি ও পেশাগত প্রশিক্ষণ দেয়, যেমন সেলাই, আইটি, হস্তশিল্প ইত্যাদি।
৩. নারীর ক্ষমতায়ন: এনজিওগুলো নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য বিশেষভাবে কাজ করছে। নারীদের ক্ষুদ্রঋণ, প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসে বড় ভূমিকা রাখছে।
৪. স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মসূচি: অ গ্রামীণ জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা, মাতৃসেবা, শিশু টিকা, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি বিষয়ক কাজ করে। এতে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত হয়।
৫. সচেতনতা বৃদ্ধি: এনজিওগুলো দরিদ্র মানুষের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী অধিকার, পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে। এতে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
৬. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা: বন্যা, ঘূর্ণিঝড় বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে এনজিওগুলো দ্রুত ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এতে দরিদ্র মানুষ দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে এনজিওগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। তারা দরিদ্র জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনের উপায়
বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বলা যায় যে — দারিদ্র্য দূর করা একটি জাতীয় ও সামাজিক দায়িত্ব। নিচে প্রধান উপায়গুলো ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হলো
১. শিক্ষার প্রসার: দারিদ্র্য দূর করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো শিক্ষা। শিক্ষিত মানুষ কাজের সুযোগ তৈরি করতে পারে, দক্ষতা অর্জন করে আয় বাড়াতে পারে। গ্রামীণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিনামূল্যে ও মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা দরকার।
২. দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণ: তরুণ প্রজন্মকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রদান করতে হবে। যেমন: সেলাই, ইলেকট্রনিক্স, মেকানিক্স, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি প্রশিক্ষণ দিলে তারা নিজের কাজ শুরু করতে পারে।
৩. চাকরির সুযোগ সৃষ্টি: সরকার ও বেসরকারি খাতে নতুন শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (SME) গড়ে তুললে কর্মসংস্থান বাড়বে। নারী ও যুব সমাজকে চাকরির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
৪. কৃষির আধুনিকায়ন: বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। আধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত বীজ, সেচব্যবস্থা ও বাজারজাতকরণ উন্নত করলে কৃষকের আয় বাড়বে। কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা জরুরি।
৫. ক্ষুদ্রঋণ ও নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি: দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে ব্যবসার সুযোগ দিলে তারা আত্মনির্ভর হতে পারে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
৬. দুর্নীতি দমন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা: দারিদ্র্য বিমোচনের পথে দুর্নীতি বড় বাধা। সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে।
৭. স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি উন্নয়ন: দরিদ্র মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন, কারণ অসুস্থতা আয় কমায়। বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করতে হবে।
৮. নারীর ক্ষমতায়ন: নারীরা যদি শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়, তবে পরিবার ও সমাজের আর্থিক অবস্থা উন্নত হয়। নারীর কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৯. গ্রামীণ উন্নয়ন ও অবকাঠামো বৃদ্ধি: রাস্তা, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ও বাজার উন্নত করলে গ্রামীণ অর্থনীতি বৃদ্ধি পায়। এতে কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসা উভয়ই লাভবান হয়।
১০. সমবায়ভিত্তিক উদ্যোগ: গ্রামের মানুষ মিলে সমবায় প্রতিষ্ঠা করে যৌথভাবে ব্যবসা বা কৃষিকাজ করলে দারিদ্র্য হ্রাস পায়।
দারিদ্র্য বিমোচন শুধু সরকারের নয়, সমাজের প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সততা, ও আত্মনির্ভরতার মাধ্যমে বাংলাদেশ একদিন দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে।
দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের পদক্ষেপ
বাংলাদেশ সরকার দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য বহু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। নিচে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:
১. দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি: সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য নানা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করেছে। যেমন:
- বয়স্ক ভাতা,
- বিধবা ভাতা,
- অসহায় প্রতিবন্ধী ভাতা,
- মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ইত্যাদি।
এই ভাতাগুলো দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের আর্থিক সহায়তা দেয়।
২. ভিজিএফ (VGF) ও ভিজিডি (VGD) কর্মসূচি: ভিজিএফ কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারকে বিনামূল্যে চাল বা খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। ভিজিডি কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র নারীদের খাদ্য ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যাতে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে।
৩. ১০ টাকা কেজি চাল প্রকল্প: দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার স্বল্পমূল্যে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। এতে নিম্নআয়ের মানুষ স্বল্প দামে খাবার পায়।
৪. আশ্রয়ণ প্রকল্প: গৃহহীন মানুষদের জন্য “আশ্রয়ণ প্রকল্প” চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে হাজার হাজার পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর, জমি ও মৌলিক সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
৫. ক্ষুদ্রঋণ ও যুব উন্নয়ন কর্মসূচি: যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (PKSF) দরিদ্র যুবকদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে। এতে তারা ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারে এবং কর্মসংস্থান তৈরি হয়।
৬. নারীর ক্ষমতায়ন: নারীদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে নারীদের স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
৭. কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প: কৃষি ঋণ, সার ও বীজে ভর্তুকি, আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ, এবং কৃষি সম্প্রসারণ কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
৮. সামাজিক নিরাপত্তা বলয় (Social Safety Net): দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার শতাধিক প্রকল্প পরিচালনা করছে। এতে বেকার, বয়স্ক, নারী ও শিশুদের জীবনমান উন্নত হচ্ছে।
৯. ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগ: তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষা, ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স ও ডিজিটাল সেবা চালুর ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
১০. বিশেষ কর্মসংস্থান প্রকল্প: “১০০ দিন কর্মসংস্থান প্রকল্প” এবং “গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি”র মাধ্যমে দরিদ্র মানুষদের অস্থায়ী কাজের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার দারিদ্র্য দূরীকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যদি এসব কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তবে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত দেশে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা
বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বিস্তারিতভাবে আলাদা করে বর্ণনা করা হলো
ক) সরকারি সংস্থার ভূমিকা
১. দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি: সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য নানা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি পরিচালনা করছে— যেমন: বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ইত্যাদি।
২. ভিজিডি ও ভিজিএফ কর্মসূচি: দরিদ্র পরিবারগুলোকে খাদ্য ও প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে সরকার এই দুটি প্রকল্প চালু করেছে।
৩. আশ্রয়ণ প্রকল্প: গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, জমি ও জীবিকার সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে।
৪. কৃষি উন্নয়ন: কৃষকদের জন্য ভর্তুকি, কৃষি ঋণ, উন্নত বীজ ও আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি আয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
৫. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা: বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক, উপবৃত্তি, বিদ্যালয় খাবার কর্মসূচি ও স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
৬. নারীর ক্ষমতায়ন: সরকার নারীদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যাতে তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়।
খ) বেসরকারি সংস্থার (NGO) ভূমিকা
১. ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি: ব্র্যাক (BRAC), গ্রামীণ ব্যাংক, আশা (ASA), প্রশিকা (PROSHIKA) ইত্যাদি সংস্থা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করছে, যাতে তারা ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারে।
২. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ: এনজিওগুলো গ্রামের দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা ও নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে।
৩. নারী উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসেবা: বেসরকারি সংস্থাগুলো নারীদের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, মাতৃসেবা ও পুষ্টি কর্মসূচিতে কাজ করছে।
৪. সচেতনতা বৃদ্ধি: এনজিওগুলো দরিদ্র জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করছে— যেমন স্বাস্থ্য, পরিবেশ, শিক্ষা ও মানবাধিকারের বিষয়ে।
৫. দুর্যোগ সহায়তা: বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র মানুষদের সহায়তা করে তারা জীবিকা পুনর্গঠনে সাহায্য করছে।
বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকার ও বেসরকারি সংস্থা উভয়ই একে অপরের পরিপূরক ভূমিকা পালন করছে।সরকার নীতিনির্ধারণ ও কাঠামোগত সহায়তা দিচ্ছে, আর এনজিওগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করছে।
এই যৌথ প্রচেষ্টার ফলেই বাংলাদেশ ধীরে ধীরে দারিদ্র্যমুক্ত রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url